তাঁর জীবনের কিছু অংশ……
১৯৫৩ সালের ডিসেম্বরে বগুড়ার ঠেঙ্গামারা গ্রামে জন্মেছিলেন আবদুস সামাদ। দারিদ্র্য, অনাচার আর বৈষম্যের চোরাগলিতে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের হাতে নিগৃহীত হতে দেখেছেন নারীদের। পুরুষজীবন দিয়ে অনুভব করেছেন সমাজে মেয়েদের নিগ্রহ। আশৈশব চেষ্টা করেছেন সমাজের দুঃখতাড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে।
২৩ বছর বয়সের পুরুষজীবন একদিন হঠাৎ করেই মুখোমুখি হয় এক দুর্বিপাকের।
এক দুরারোগ্য রোগ বাসা বাঁধে শরীরে।
ঢাকার চিকিৎসকরা যখন জীবনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন, তখন রাজশাহী মেডিকেলের চিকিৎসকরা তার শরীরের অভ্যন্তরে আবিষ্কার করলেন লিঙ্গ পরিবর্তনের সকল আভাস। আব্দুস সামাদের শরীরের গোপনে বাসা বাঁধা টিউমার সারাতে গিয়ে চিকিৎসকেরা পেলেন নারীজীবনের আয়োজন।
নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও চিকিৎসক, শিক্ষক, বন্ধুস্বজনদের পীড়াপীড়িতে অনুমতি দেন জেন্ডার ট্রান্সফারের প্রয়োজনীয় কাটাছেঁড়ার। জটিল অস্ত্রোপচার শেষে ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরেই পুরুষ আব্দুস সামাদ রূপান্তরিত হন নারীতে। নতুন নাম হোসনে-আরা বেগম।
আশৈশব বন্ধু হাত বাড়িয়ে দেন নতুন জীবনে। বন্ধুকেই স্বামীরূপে গ্রহণ করে শুরু হয় হোসনে-আরার নতুন জীবনের যাত্রা।
সরকারি কলেজের শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু হলেও আবাল্য সমাজকর্মী হোসনে-আরা সকল বাধা, বিপত্তি, সঙ্কট উৎরে শ্রম আর সাধনায় গড়ে তোলেন দেশের বড় এনজিওগুলোর অন্যতম ঠেঙ্গামারা
মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস)।
অশোকা ফেলোশিপ, বেগম রোকেয়া পদকসহ নানা স্বীকৃতির পদক মিললেও হোসনে-আরা বেগম অপেক্ষায় আছেন আরো বড় পুরস্কারের। স্বপ্ন আছে তার আকাশছোঁয়ার। শুধু ডোনারনির্ভর এনজিও নয়। উদ্যোক্তাপ্রবণ ব্যবসা দিয়ে মানুষের অর্থনৈতিক দুরবস্থা ঘোচানোর স্বপ্নে বিভোর টিএমএসএস-এর নির্বাহী পরিচালক ড. হোসনে-আরা বেগম এক জীবনে দুই জীবন দেখেছেন।
সেই দুই জীবনের বিচিত্র, বৈভবময় অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন।
বলেছেন, নারী ও পুরুষ জীবনের দাম্পত্য সম্পর্ক, সংসার, সন্তান পালনের গল্প।
বয়ান করেছেন ভিক্ষুক দলের সংগৃহীত মুষ্টি মুষ্টি চাল কিভাবে একটি বড় সংগঠনের জন্ম দেয়,সেই সুদীর্ঘ সংগ্রামের কথা।
((((সংগৃহিত))))