চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে হাজার হাজার পোস্টারিং করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ভোলাহাটের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষ। গেল ২-৩ দিন থেকে ভোলাহাট, নাচোলসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর মহন্ত এস্টেট এর মহন্ত মহারাজ ক্ষিতিশ চন্দ্র আচারী মহান বিজয় দিবসকে বিকৃতি করে “১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা দিবস” ‘মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী’ লিখে হাজার হাজার রঙিন পোস্টার দেয়ালে দেয়ালে টাঙগিয়েছেন।
এতে সাধারণ মানুষ পোস্টার দেখে মহান বিজয় দিবসকে স্বাধীনতা দিবস লেখায় মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, জনপ্রতিনিধি হয়ে চাচ্ছেন অথচ তিনি জানেন না ১৬ ডিসেম্বর কি দিবস।
তারা ক্ষোভ করে বলেন, ক্ষিতিশ চন্দ্র আচারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে পোস্টার তৈরীর পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি মোটেই গ্রহণ যোগ্য নয়। আওয়ামী লীগের ব্যানারে তার মনোনয়ন প্রত্যাশা করা তো দূরের কথা এ অন্যায়ের জন্য তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান কমান্ডের সদস্যগণ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির তীব্র সমালোচনা করে ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান ও রাজাকার আলবদর বাহিনীর সাথে তার কোন যোগসূত্র আছে কিনা সরকারের কাছে খতিয়ে দেখার দাবি করেন।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভোলাহাট উপজেলার সভাপতি আলহাজ্ব প্রকৌশলী আমিনুল হক সিল্কসিটি নিউজকে বলেন- ক্ষিতিশ যে পোস্টার টাঙগিয়েছেন তা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াসিন আলী শাহ একই কথা বলেন।
উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আশরাফুল হক চুন্নু বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও মূল্যবোধ যারা হৃদয়ে ধারণ করে না তাদের দ্বারা এমন অসংগতিপূর্ণ কর্মকান্ড করা স্বাভাবিক।
অপরদিকে একই বিষয়ে ভোলাহাট মোহবুল্লাহ মহাবিদ্যালয়ের ভাইস প্রিন্সিপাল ও ইতিহাসবিদ শফিকুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে জানান, যে কোন ইতিহাস বিকৃতিই অপরাধ। তবে দেশের মাটিতে বসবাস করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি মেনে নেয়া যায়না। অক্ষর জ্ঞানহীন ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসই যদি না জানে তবে তার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হওয়ার কোন যোগ্যতা নেই বলে মত দেন। তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে ভোলাহাটের মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের ব্যক্তিরা।
এবিষয়ে ক্ষিতিশ চন্দ্র আচারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আবারও ১৬ ডিসেম্বরকে স্বাধীনতা দিবস বলে ছাপাখানার উপর দোষ চাপিয়ে আসল ঘটনাটি এড়িয়ে যান।