বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮৬ বছর পর আয়া সোফিয়ায় আযানের ধ্বনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  তুরস্কের প্রাচীন নগরী ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া জাদুঘরকে পুনরায় মসজিদে রূপান্তরে আইনত আর কোনো বাধা নেই বলে গত ১০ জুলাই রায় জানিয়েছেন দেশটির আদালত।

এরপর নতুনপ্রাণ মসজিদটিতে প্রায় শতাব্দীকাল পরে ফের আজান দেয়া হয়েছে। তুরস্কের ‘হাবার টিভি’সহ অন্যান্য টেলিভিশন চ্যানেলে এই দৃশ্য সম্প্রচার করা হয়।

পরবর্তীতে টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে এরদোগান জানান, ২৪ জুলাই থেকে আয়া সোফিয়ায় নামাজ আদায় করা যাবে। তবে সবার প্রার্থনার উপযোগী করে তুলতে ছয় মাস সময় লাগবে।

আয়া সোফিয়াকে কী কাজে ব্যবহার করা হবে তার সিদ্ধান্ত নেয়া তুরস্কের সার্বভৌম অধিকার বলেও উল্লেখ করেন এরদোগান। মসজিদে পরিণত হলেও এটি সব ধর্মের মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলেও জানান তিনি।

এরদোগান বলেন, ‘আমাদের অন্য সব মসজিদের মতই আয়া সোফিয়া স্থানীয় বা বিদেশি, মুসলিম বা অমুসলিম, সবার জন্যই উন্মুক্ত থাকবে’।

ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, শুক্রবার তুরস্কের অনেক মুসলিম আয়া সোফিয়ার সামনে সমবেত হন। নতুন সিদ্ধান্ত জানার পর তারা স্থাপনার বাইরে প্রার্থনায় অংশ নিয়েছেন এবং সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আয়া সোফিয়ার ইতিহাস আজ অবধি বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে আবর্তিত হয়ে আসছে।

৩৬০ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রোমান সাম্রাজ্যের প্রথম খ্রিস্টান সম্রাট কনস্টান্টিনোপল। বর্তমান কাঠামো তৈরি করেন সম্রাট জাস্টিনিয়ান।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১২০৪ সাল পর্যন্ত আয়া সোফিয়া ছিল ইস্টার্ন অর্থডক্স ক্যাথিড্রাল। ১২০৪ থেকে ১২৬১ সাল পর্যন্ত রোমান ক্যাথলিক চার্চ, ১২৬১তে এটি আবার ইস্টার্ন অর্থডক্স ক্যাথিড্রালে ফিরে আসে এবং ১৪৫৩ সাল পর্যন্ত অর্থডক্স গির্জা হিসেবেই বহাল ছিল আয়া সোফিয়া।

অতঃপর ঘটনাবহুল ঐতিহাসিক এক যুদ্ধে ইস্তাম্বুল জয়ের সময় এটিও জয় করেন উসমানি খলিফা সুলতান মুহাম্মাদ আল ফাতিহ। এরপরই এটিকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়।

ঐতিহাসিক সূত্রের বরাতে আলজাজিরা জানায়, সুলতান মুহাম্মাদ আল ফাতিহ ইস্তাম্বুল জয় করার পর যাজকদের কাছ থেকে আয়া সোফিয়া বিক্রি করার আবেদন জানান এবং যাজকরা রাজী হলে নিজের টাকায় গির্জাটি ক্রয় করেন।

তিনি বিজয়ী হিসেবে গির্জা ছিনিয়ে নিতে পারতেন, রাষ্ট্রীয় টাকায় কিনতে পারতেন, কিন্তু সেসব না করে চুক্তিনামা করে নিজের টাকায় গির্জাটি ক্রয় করে নেন। এখনও সেই ঐতিহাসিক চুক্তিনামা সংরক্ষিত আছে।

এই বিভাগের আরো খবর