শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৫ দিনে ২৭ হাজার আসামির জামিন

ডেস্ক নিউজ : সারা দেশের নিম্ন আদালতে গত পাঁচ কার্যদিবসে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি আসামিকে জামিন দেওয়া হয়েছে। সবমিলে গত ১১ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত ১৫ কার্যদিবসে নিম্ন আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি নিয়ে প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার আসামিকে জামিন দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাইকোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের পাঠানো বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ৩১ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত ৫ কার্যদিবসে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন আদালতে ৩৮৫৮টি জামিনের আবেদন দাখিল করা হয়। এরমধ্যে শুনানি শেষে ৩৪২৯টি আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। এই সময় ১৭১৪ জন আসামিকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে এ সময়ে ১৮৯৭টি জামিন আবেদন খারিজ করা হয়েছে। এছাড়া একই সময় চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৮৭৯টি, রংপুর বিভাগে ১১২৭টি, বরিশাল বিভাগে ৬১২টি, রাজশাহী বিভাগে ২২৯১টি, খুলনা বিভাগে ১৬৩৬টি, সিলেট বিভাগে ১০২৪টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০২৬টি জামিনের আবেদন দাখিল করা হয়।

এসব আবেদনের ওপর শুনানি শেষে চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩৩১ জন, রংপুর বিভাগে ৪০০ জন, বরিশাল বিভাগে ২৩২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮৭২ জন, খুলনা বিভাগে ৮৫৮ জন, সিলেট বিভাগে ৪৫৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৮৩ জনের জামিন মঞ্জুর করা হয়। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ১৫ কার্যদিবসে ৪৭ হাজার ৬২৭টি জামিনের আবেদন নিষ্পত্তি করে ২৭ হাজার ৪৮০ জনের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। এরমধ্যে গত ২৮ মে পর্যন্ত মোট ১০ কার্যদিবসে ৩৩ হাজার ২৮৭টি আবেদনের নিষ্পত্তি করে ২০ হাজার ৯৩৮ আসামির জামিন মঞ্জুর করা হয়। আর ৩১ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত গত পাঁচ কার্যদিবসে ১৪ হাজার ৩৪০টি জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করে ৬৫৪২ জনের জামিন মঞ্জুর করা হয়।

করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে আদালত বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সারা দেশে আদালতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ক্রমেই সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ছে। এরইমধ্যে সরকার সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। গত ১০ মে নিম্ন আদালতে কেবল ভার্চুয়াল জামিন শুনানি করতে নির্দেশ দেন  সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এরপর থেকে নিম্ন আদালতে ভার্চুয়াল আদালতে জামিন শুনানি শুরু হয়। তবে জরুরি প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১১ মে থেকে ভার্চুয়াল আদালত কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে কেবল সীমিত আকারে নির্দিষ্ট কিছু আদালতে জামিন আবেদনের শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ৩০ মে’র পর আদালতের সংখ্যা ও এখতিয়ার বাড়ানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব আদালতে শুনানি গ্রহণ করা হচ্ছে।

এর আগে ভার্চুয়াল আদালত চালু করতে রাষ্ট্রপতিকে অধ্যাদেশ জারির জন্য অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করা হয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে। এই আবেদন পাওয়ার পর রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার আলোকে আইন মন্ত্রণালয় গত ৯ মে ভার্চুয়াল উপস্থিতিকে সশরীরে উপস্থিতি হিসেবে গণ্য করে আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০ নামে গেজেট প্রকাশ করে। এই অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলে ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আদালতকে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়। পরদিন ১০ মে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশে ভার্চুয়াল আদালত চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফুলকোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওইদিনই ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ এবং অধস্তন আদালতের জন্য আলাদা আলাদা ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ এবং আইনজীবীদের জন্য ‘ভার্চুয়াল কোর্টরুম ম্যানুয়াল’ প্রকাশ করা হয়। এসব নিয়ম মেনেই সারা দেশে আদালত পরিচালিত হচ্ছে।

এই বিভাগের আরো খবর