শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রিজেন্ট-জেকেজির নেপথ্যে গডফাদার কারা- রিজভী

ডেস্ক নিউজ : কোভিড-১৯ টেস্ট প্রতারণা করা রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি হেলথকেয়ারের কর্ণধারদের নেপথ্যে গডফাদার কারা জানতে চেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেছেন, এই দুই প্রতিষ্ঠানের জালিয়াতির নেপথ্যে গডফাদাররা কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে? সোমবার দুপুরে করোনা প্রতিরোধে লক্ষণভিত্তিক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে রিজভী এ প্রশ্ন তোলেন। রিজভী বলেন, সাহেদের (মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম) কেলেঙ্কারি, জেকেজির চেয়ারম্যানের (ডা. সাবরিনা এ চৌধুরী) কেলেঙ্কারি– এরা সবাই আওয়ামী লীগের লোক। আজ যখন চারদিক থেকে আওয়াজ উঠেছে, কই রুই-কাতলা তো ধরা পড়ে না। রোববার নামমাত্র একজন (ডা. সাবরিনা) ধরা পড়লেন। আমরা জানতে চাই, এর পেছনে গডফাদার কারা? এর নেপথ্যে সেই ক্ষমতাশালী লোক তারা কারা? কই তারা তো ধরা পড়ে না। সাহেদের সঙ্গে, জেকেজির সঙ্গে আরও জড়িত যারা আছেন, তাদের তো আপনারা ধরতে পারবেন না। রুই-কাতলাদের আপনারা ধরতে পারবেন না। কারণ রা ক্ষমতাবান লোক।

রোববার বিএনপির ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি’র সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ এর জবাব দেন রিজভী। বলেন, সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ডে চলছে আওয়ামী লীগ। সে সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে– তাদের মধ্যে মানবতার কোনো কাজ নেই। তাদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর কোনো কাজ নেই। জনগণের পকেট থেকে টাকা দিয়ে যে ত্রাণ কেনা হয়েছে, সে ত্রাণ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসা থেকে, না হলে গ্যারেজ থেকে, না হলে পুকুর থেকে, না হলে মাটির তলা থেকে পাওয়া গেছে। এভাবে তারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতিতে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত এমন অভিযোগ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, কয়েক দিন ধরে আপনারা দেখছেন মাস্কের দুর্নীতি কে করেছে? মন্ত্রীর ছেলে। করোনার জন্য জীবন বাঁচানোর মেশিন ভেন্টিলেটর। সে ভেন্টিলেটর দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কে? ক্ষমতাসীন দলের লোক অথবা মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন। যখন পত্রপত্রিকা, গণমাধ্যম চারদিকে ছি ছি পড়ে গেছে। আওয়ামী লীগের এমন কোনো নেতা নেই, যার সঙ্গে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিকের সম্পর্ক নেই। ছবি তুলেছেন, সেটি ভিন্নকথা। কিন্তু সরকারের পক্ষে কী করে স্বাস্থ্য অধিদফতর তাদের করোনা টেস্টে অনুমোদন দিল? স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি (মহাপরিচালক) যখন অনুমোদন দেন, সেটি তো সরকারেরই অনুমোদন।

রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মো. সাহেদের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, উনি সরকারের পক্ষে টকশো করেছেন। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য তিনি। তার পরে বললেন কী? তিনি নাকি হাওয়া ভবনের লোক। যখন ফাঁস হয়ে যায়, যখন মুখ দেখানোর কিছু থাকে না, তখন বিএনপি অথবা হাওয়া ভবনের বলে চাপিয়ে দেন তারা। ওরা দুর্নীতি-লুটপাট সব করে। যখন ধরা পড়ে যায়, তখন বলে হাওয়া ভবনের লোক। তাদের বলি– এত দিন লালন করেছেন, পুষেছেন, সমৃদ্ধি দিয়েছেন, সাধারণ মানুষের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা অর্জন করেছেন। যাদের (করোনা আক্রান্ত রোগী) পজিটিভ, তাদের নেগেটিভ সনদ দিয়েছেন। আর যাদের নেগেটিভ, তাদের পজিটিভ সনদ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছেন।

বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের দমনপীড়ন নীতির অভিযোগ করেন রিজভী। বলেন, একটি মাসুম বাচ্চা মেয়ে মাহমুদা পলি, তাকে রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। কেন? কারণ সে ফেসবুকে লিখেছে সরকারের বিরুদ্ধে। এখনও সে কারাগারে। ছাত্রদলের সাবেক নেতা টিটো হায়দারকে চার-পাঁচ দিন আগে তুলে নিয়ে গেছেন। সবাই দেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি লোকেরা তাকে ধরে নিয়ে গেছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই– এই দুর্বৃত্তপনা দিয়ে, এই অমানবিক মনুষ্যত্বহীন মানসিকতার শাসন দিয়ে আপনাদের একের পর এক কালো আচরণ বন্ধ করে রাখতে পারবেন না। কোনো না কোনো ফাঁক দিয়ে বের হবেই।

এই বিভাগের আরো খবর