বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বারোটি টিপস নিজের যৌবন ধরে রাখার জন্য।

যৌবন ধরে রাখতে আমরা সবাই চাই। কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চেহারায় আসা পরিবর্তনগুলোকে আটকানো তো মুখের কথা নয়।

তার জন্য প্রয়োজন নিয়ম মেনে কিছু রুটিন ফলো করা। তাহলে ৪০-এ আপনাকে হয়তো কুড়ির মতো লাগবে না, তবে অকালে বুড়িয়ে যাওয়াও আপনাকে গ্রাস করতে পারবে না।

১.

যৌবন ধরে রাখার মূল মন্ত্রই হল সুস্থ, নির্মেদ শরীর। আর এজন্য হাঁটার কোনও বিকল্প নেই। প্রতিদিন অন্তত আধঘণ্টা করে হাঁটুন। মোবাইলে গান শুনতে শুনতে হাঁটা নয়, ঘড়ি ধরে একেবারে ব্রিস্ক ওয়াকিং। ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে, হার্ট ভালো থাকবে। নিয়ন্ত্রণে থাকবে হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, প্রেসারের মতো সমস্যা। ফলে আপনাকেও লাগবে ঝরঝরে।

২.

প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তত একটা করে মৌসুমী ফল রাখুন। তবে রোজ যদি আম, কলা, আনারস, কাঁঠাল খেতে থাকেন, তাহলে ওজন বেড়ে আপনাকে বয়সের থেকে আরও দশ বছর বেশি বয়স্ক লাগবে। তাছাড়া ফল পুষ্টিগুণেও ভরপুর। ফলে থাকা ফাইবার, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরে পুষ্টি যোগায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আর আপনাকে রাখে তরতাজা।

৩)

দৈনন্দিন ডায়েট থেকে সবুজ শাকসবজি বাদ দিলে কিন্তু চলবে না। সবজি খেলে মানসিক উন্নতিসহ শারীরিক উন্নতিও হয়। মানুষ আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। মোটের উপর সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

৪.

ওজন কমাতে গিয়ে বা স্রেফ ইচ্ছে করছে না বলে ব্রেকফাস্ট কখনো বাদ দেবেন না। তাহলে কিন্তু শরীরের মেটাবলিজম সিস্টেমের গোলমাল হয়ে বেশি করে খিদে পেতে থাকে। আর বারে বারে খেতে খেতে আখেড়ে আমরা নিজের ক্ষতিই ডেকে আনি।

৫.

যৌবন ধরে রাখতে হলে মিষ্টি জাতীয় খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। চকোলেট, পেস্ট্রি, ব্রাউনি, আইসক্রিমের মত খাবারে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট থাকে যা শরীরে ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরল বাড়ায়। তাই এগুলো যতটা সম্ভব কম খান। তা বলে ডায়েট থেকে চিনি পুরোপুরি ছেঁটে ফেলবেন না। অল্প হলেও নিয়মিত খান। তাহলে শরীরের এনার্জি লেভেল ঠিক থাকবে। শরীর-মনজুড়ে স্বতঃস্ফূর্ততার অনুভূতি থাকবে।

৬.

বয়স বাড়ার প্রথম লক্ষণটাই দেখা যায় আমাদের ত্বকে। চামড়া কুঁচকে যাওয়া, নির্জীব হওয়ার মতো ত্বকের সমস্যাগুলো শুরু হয় ৩৫-এর পর থেকেই। তাই বয়স ৩০ হলেই নিয়ম করে ত্বকের যত্ন নিন। ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং রোজ করুন নিয়ম করে। আর ৩০ এর পর থেকে ব্যবহার করুন অ্যান্টি এজিং ক্রিম। মাসে অন্তত দুবার ফেস ম্যাসাজ করান। তবে খুব প্রয়োজন না হলে ফেসিয়াল করবেন না। দিনের বেলা সূর্যের আলো যেন সরাসরি ত্বকে না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করার জন্য এসপিএফ ৩০ বা এর বেশি উপাদান সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করা জরুরি।

৭.

শরীরের অতিরিক্ত ওজন ঝরিয়ে ফেলুন। অতিরিক্ত ওজন খুব দ্রুত মানুষকে বুড়িয়ে দেয়। এমনকি কমিয়ে দেয় আত্মবিশ্বাসও। নিয়মিত ব্যায়াম ও খাবার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেললে যৌবন ধরে রাখা সম্ভব। তা বলে একেবারে খাওয়া বন্ধ করেল কিন্তু হিতে বিপরীত হবে। শরীরের যাবতীয় গ্ল্যামার শেষ হয়ে, আপনার চেহারায় নেমে আসবে অকাল বার্ধক্য।

৮.

সুস্থ দীর্ঘজীবন পেতে এবং যৌবন ধরে রাখতে সকালে খানিকক্ষণ সূর্যালোকে থাকুন। সূর্যের আলোতে আছে ভিটামিন ডি যা হাড়কে মজবুত করে। এবং সঙ্গে মানসিক চাপ ও অবসন্নতাও কমিয়ে দেয়।

৯.

চেষ্টা করুন প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমোতে। সঙ্গে হাল্কা ব্যায়ামের অভ্যেস রাখতে পারলে উপকৃত হবেন আপনিই।

১০.

অ্যালকোহল, সিগারেট বা কোনও নেশার দ্রব্য বর্জন করুন।

১১.

এড়িয়ে চলুন স্ট্রেস। স্ট্রেসও খুব তাড়াতাড়ি চেহারায় বয়সের ছাপ ফেলে।

১২.

প্রয়োজন আনুন মানসিকতায়। বয়স যে আদতে বাড়ছে, এই সত্যিটা মেনে নিন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে পাল্টান। যা আপনার সাধ্যের মধ্যে রয়েছে, তা নিয়েই খুশি থাকার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত উচ্চ আকাঙ্ক্ষা জীবন থেকে একেবারে ছেঁটে ফেলুন। আপনি ভালো থাকবেন, চারপাশের সবাইকে ভালো রাখতে পারবেন।

এই বিভাগের আরো খবর