শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাতাসে ভাসতে পারে করোনা, মেনে নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিল ডব্লিউএইচও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কিছু শর্তসাপেক্ষে নভেল করোনাভাইরাসকে বায়ুবাহিত বলে মেনে নিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। করোনাভাইরাস ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়, করোনাজনিত মহামারির শুরু থেকেই এমনটা দাবি করে আসছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কিন্তু সম্প্রতি ৩২ দেশের ২৩৯ বিজ্ঞানী নিজেদের গবেষণার পর ডব্লিউএইচওর কাছে করোনাভাইরাসের বায়ুবাহিত হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আবেদন করেছিল। প্রাথমিকভাবে সে তত্ত্বকে মেনে নিয়ে ডব্লিউএইচও জানিয়েছিল, সব খতিয়ে দেখার পর এ নিয়ে রায় দেবে তারা। এরপর গতকাল শুক্রবার ডব্লিউএইচও জানাল, বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ আবহাওয়ায় বাতাসে ভেসে ছড়ায় করোনাভাইরাস। এরপরই নতুন গাইডলাইন বা নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, মানুষের জানা উচিত বাতাসে ভেসে ছড়ায় করোনাভাইরাস। এজন্য করোনাভাইরাসের থেকে বাঁচতে এ তথ্য জানা থাকলে উপকৃত হবে মানুষ।

কিছু বিশেষ এলাকায় বিশেষ পরিস্থিতিতে হাওয়ায় ভেসে ছড়ায় করোনা ভাইরাস। কোনো ভিড়ে পরিপূর্ণ জায়গায় এরোসোল ট্রান্সমিশনের পাশাপাশি হাওয়ায় ভেসেও ট্রান্সমিশন হয়। এ জায়গাগুলো হলো ব্যায়ামাগার, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি।

কোনো বন্ধ জায়গায় করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি যদি দীর্ঘক্ষণ থাকে, তাহলে সে একই হাওয়ায় যদি অন্য মানুষরা নিশ্বাস নেয়, তাহলে তাঁদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়ায়। তাই মানুষ যদি এ ধরনের জায়গা এ সময় এড়িয়ে চলে, তাহলে করোনা থেকে বাঁচতে পারে। এবার এ ধরনের জায়গাগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখে এরকম জায়গাতেও না যাওয়াই ভালো।

এবার বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা এ পরিস্থিতির অবস্থাগুলো খতিয়ে দেখবেন, তারপর এ বিষয়গুলো নিয়ে আরো বিশদ তথ্য পাওয়া যাবে। ডব্লিউএইচও যে নতুন গাইডলাইন জারি করেছে, তাতে ভিড়ে ভরা জায়গায় একেবারেই না যাওয়া ভাল। রেস্তোরাঁ ও ফিটনেস ক্লাসে এখনই না যাওয়া ভালো। এ ছাড়া মাস্ক পরা আরো জরুরি এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে।

ডব্লিউএইচওর নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছে, বায়বীয় সংক্রমণ রুখতে গেলে ভিড় এড়ানো প্রয়োজন। দালান ও ভবনে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা একান্ত সম্ভব না হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। যেহেতু করোনার সংক্রমণ মূলত সংক্রমিত স্থান বা সংক্রমিত ব্যক্তির লালারস, কফ, হাঁচি বা কাশির সঙ্গে নিসৃত মিউকাস থেকে ছড়ায়, তাই শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাই একমাত্র পন্থা। এ ছাড়া উপসর্গযুক্ত ও উপসর্গহীন আক্রান্তদের কথা মাথায় রেখে সতর্ক হওয়া উচিত।

এ ছাড়া শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ রুখতে গেলে প্রথমেই মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোনো বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া কমপক্ষে তিন ফুটের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। অপ্রয়োজনীয়ভাবে মুখের বিভিন্ন অংশ স্পর্শ করা বন্ধ করতে হবে। জনবহুল স্থান বা বায়ু চলাচল করতে পারে না, এমন জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে। কর্মক্ষেত্র হোক বা গৃহ, দিনের শেষে জীবাণুমুক্ত বাধ্যতামূলক করতে হবে। এ ছাড়া দেহের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতাকে অটুট রাখার জন্য সঠিক বৈষম্যের আহার এবং যোগব্যায়াম করতে হবে বলে জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এই বিভাগের আরো খবর