শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দু’বছরেও মেরামত হয়নি নওগাঁ শিব নদীর বেঁড়িবাঁধ, ব্যাপক প্লাবনের আশংকা

রহিদুল ইসলাম রাইপ,নওগাঁ প্রতিনিধিঃ গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের পানি বৃদ্ধির কারণে নওগাঁর মান্দা উপজেলার আত্রাই ও শিব নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

শিব নদীর টেংরা নামক স্থানে গত দু’বছর আগে ভেঙ্গে যাওয়া স্থান দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

দ্রুত এই ভেঙ্গে যাওয়া অংশ মেরামত না করা হলে বন্যার পানিতে হাজার হাজার হেক্টর জমি ফসল তলিয়ে যাওয়াসহ ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর মান্দার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শিব নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করে তেতুলিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের কয়েক লাখ হেক্টর জমির ধান ও অন্যান্য রবি শস্য প্লাবিত হয়েছে। এই ভেঙ্গে যাওয়া অংশটুকুর পাশে রয়েছে রাজশাহী জেলার মোহনপুর ও তানোড় অংশ। নদীর দক্ষিণ দিকে শিব নদীতে কোন বাঁধ না থাকায় পানিতে প্লাবিত হয় তীরবর্তী ওই গ্রামগুলো। তখন নিজেদের রক্ষা করার জন্য ওই গ্রামের মানুষরা নদীর বেড়িবাঁধের টেংরা নামক স্থানে কেটে দেয়। পরে ভেঙ্গে যাওয়া অংশটুকুর মেরামত কাজ ভালো না হওয়ার কারণে পরবর্তীতে তা আবার ভেঙ্গে যায়।

কিন্তু গত দুই বছর ধরে ভেঙ্গে যাওয়া অংশটুকু মেরামত না করায় সম্প্রতি শিব নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে তেতুলিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের কয়েক লাখ হেক্টর জমির ধান ও অন্যান্য ফসল। পানিতে ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ। এছাড়াও পানি প্রবেশ করে গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে করে কয়েকশ গ্রামবাসী আতঙ্কে রয়েছেন।

অপরদিকে, শিব নদীর বেড়িবাঁধ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

শংকরপুর গ্রামের আব্দুল জলিল, ডব্লিইসহ অনেকে জানান, ভেঙ্গে যাওয়া অংশটুকু মেরামত না করায় পানি ঢুকে ডুবে গেছে লাখ লাখ হেক্টর জমির ধান ও অন্যান্য ফসল। ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ। হঠাৎ করেই ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় রক্ষা করা যায়নি কোন কিছুই। যদি এখনই বেড়িবাঁধটি মেরামত করা না হয় তাহলে যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যাবে।

তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী বজেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ভাঙ্গা অংশ দিয়ে হঠাৎ করেই পানি প্রবেশ করে আমার শতাধিক বিঘা পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। আমি এই অংশটুকু মেরামত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিত ভাবে আবেদন করেছি। আর আমাদের বড় ধরনের কোন বরাদ্দও নেই যে তা দিয়ে পরিষদের পক্ষ থেকে মেরামত করবো। দ্রুত এই ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ টুকু ভালো ভাবে মেরামত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের
সুদৃষ্টি কামনা করছি।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান খান বলেন, স্থানীয়দের কেটে দেওয়ার জন্যই বাঁধের ওই অংশটুকু বার বার ভেঙ্গে যায়। কিন্তু বাঁধটি পাহাড়া দিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই স্থানীয়দের সচেতন হতে হবে আগে। এছাড়াও এই অংশটুকু দ্রুত মেরামত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানাবো।

এই বিভাগের আরো খবর