বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘ পুরস্কার পেল ভূমি মন্ত্রণালয়

ডেস্ক নিউজ :  অনলাইনে ভূমির নামজারি (ই-মিউটেশন) উদ্যোগ বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ ‘ইউনাইটেড ন্যাশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ পেয়েছে বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয়।

দেশব্যাপী ই-মিউটেশন উদ্যোগ বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে ‘ই-মিউটেশন’ কার্যক্রমের জন্য ‘স্বচ্ছ ও জবাবদিহি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিকাশ’ ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার পেয়েছে মন্ত্রণালয়। শনিবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ কর হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদের স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ভূমি মন্ত্রণালয় সকল ভূমিসেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তরের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে এবং ভূমিসচিব মো. মাক্ছুদুর রহমান পাটওয়ারীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্পের সার্বিক সহায়তায় ভূমি সংস্কার বোর্ডের মাধ্যমে ই-নামজারি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি কর্তৃক জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমাকে দেয়া এক চিঠির বরাত দিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ভূমি মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধিকে লেখা চিঠিতে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যু ঝেনমিন উল্লেখ করেন, ‘জনস্বার্থে সেবার উন্নয়নে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে মন্ত্রণালয়টি (ভূমি) এবং আমি বিশ্বাস করি, ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ আপনার দেশে জনপ্রশাসনের উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে। প্রকৃতপক্ষে, এই কাজ (ই-নামজারি) জনসেবায় ব্রতী হতে অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ হিসাবে কাজ করবে’।

প্রতিবছর ২৩ জুন যথাযোগ্য আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে জাতিসংঘ দিবসটি উদযাপন করে, এবং এসময় বিশ্বজুড়ে সরকারি খাতে গৃহীত সর্বোত্তম উদ্ভাবনী উদ্যোগসমূহকে পুরস্কারের মাধ্যমে ¯স্বীকৃতি দেয়া হয়। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারী-এর প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ এ বছর পাবলিক সার্ভিস পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে। তবে জাতিসংঘ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নমুখী প্রচার কার্যক্রমের মাধ্যমে এই অসামান্য অর্জন ও পুরস্কার বিজয়ের বিষয়টি তুলে ধরার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

ভূমিমন্ত্রীর উদ্যোগে গত বছরের ১ জুলাই হতে সারাদেশে একযোগে শতভাগ ই-নামজারি বাস্তবায়ন শুরু হয় (তিনটি পার্বত্য জেলা বাদে), বর্তমানে ৪৮৫ টি উপজেলা ভূমি অফিস ও সার্কেল অফিসে এবং ৩৬১৭ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ই-নামজারি বাস্তবায়ন হচ্ছে।

২০১৯-২০ সালের মে মাস পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭০টি আবেদন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৭২ হাজার ৫৮৮টি আবেদন অনলাইনে নিষ্পত্তি হয়েছে।

মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গত ১৭ মার্চ থেকে ম্যানুয়াল আবেদন নেয়া বন্ধ রয়েছে। প্রান্তিক অঞ্চলে অনেক সময় সেবা গ্রহীতারা ভূমি অফিসে গিয়ে বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করেন। ই-মিউটেশনের কারণে যা তারা বাসায় বসেই করতে পারেন। ভূমি অফিসে ই-নামজারি চালু হওয়ায় দালালদের দৌরাত্ম্য ও মাঠ পর্যায়ের দুর্নীতির সুযোগ কমছে, সেবা প্রার্থীদের হয়রানি এবং সর্বোপরি সেবা পেতে কম সময় ও কম খরচ হচ্ছে। এর ফলে নাগরিক সন্তুষ্টি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নাগরিক সেবা গ্রহণ করার পর সেবা প্রদানের মান নিয়ে সেবা গ্রহীতারা যাতে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন সেজন্য ওয়েবসাইটে সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে এগুলো পরবর্তীতে মূল্যায়ন করে সেবার মান বৃদ্ধি করা যায়।

এই বিভাগের আরো খবর