শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা ছড়িয়ে পড়ার ৩ মাস আগেই জানতেন ট্রাম্প!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা মহামারী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। দেশটিতে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন এই ভাইরাসে। রোজ হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে করোনা প্রাদুর্ভাবের তিন মাস আগে নাকি এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। শুক্রবার সিএনএন-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ টোডাস ফিলিপসন। টোডাস ট্রাম্প প্রশাসনের কাউন্সিল অব ইকনমিক অ্যাডভাইজারস-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তার দাবি অনুযায়ী, ফ্লুয়ের মতো সংক্রমণ যে মহামারীর আকার নেবে, সেই বিপদ সম্পর্কে হোয়াইট হাউসকে তার টিম অনেক আগেই তথ্য দিয়ে রেখেছিল। কোভিড-১৯ আঘাত হানার তিন মাস আগেই তারা সতর্ক করেছিলেন।

ফিলিপসন বলেন, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর গোটা দুনিয়া যখন নভেল করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে আঁচ করতে পারেনি, তখনই কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করা হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনেরই শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের একটি দল তাকে মহামারী (কভিড-১৯) ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেছিল। ‘ভ্যাকসিন আবিষ্কারের মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারির প্রকোপ কমানোর প্রভাব’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনটির টোডাস ফিলিপসন ছিলেন সহলেখক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান অর্থনীতিবিদের এ দাবি কিন্তু বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। টোডাস ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুতে যখন প্রতিবেদনটি হোয়াইট হাউসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাতে হস্তান্তর করেন, তখন চীনের উহানে সবে এক-দুজনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এর তিন মাস পর, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি চীন নিজে এ সংক্রমণের কথা জানায়। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ডিসেম্বরের শেষে করোনা সংক্রমণের কথা ঘোষণা করে।

তিনি জানান, মহামারীর আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে ৪১ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্টও হোয়াইট হাউসে জমা দিয়েছিলেন দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করার কথাও বলা হয়েছিল। এই অর্থনীতিবিদ বলেন, কিন্তু, দুর্ভাগ্য ট্রাম্প প্রশাসন অর্থনীতিবিদদের রিপোর্টটিকে অবজ্ঞা করেছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও গুরুত্ব দিতে চাননি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মহামারীতে ৫ লাখ আমেরিকান যে মারা যেতে পারেন, ৪১ পাতার ওই রিপোর্ট সেই আশঙ্কাও ব্যক্ত করা হয়েছিল। তারা আরও জানিয়েছিলেন, এই মহামারীর ধাক্কায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩.৭৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। শীর্ষ এই অর্থনীতিবিদ জোর দিয়ে বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট একা নন, ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও এই রিপোর্ট সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত জুনে ফিলিপসন তার পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শিক্ষকতার পেশায় ফিরে গিয়েছেন। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর ওয়ার্ল্ডওমিটারসের সবশেষ তথ্যে বলা হয়েছে, রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ৪৪ লাখ ২৭ হাজার ৭৩১ জন। আর মারা গেছেন ৬ লাখ ৪ হাজার ৯৬৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮৬ লাখ ১৮ হাজার ১০০ জন।

এই বিভাগের আরো খবর