শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় আক্রান্ত মা যতক্ষণ বেঁচেছিলেন জানালার কাছে বসেছিল ছেলে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মহামারি করোনাভাইরাস বিশ্ব মানবতাকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। দেখিয়ে দিয়েছে বর্তমান যুগের মাতৃভক্তির অবস্থান কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে। করোনায় আক্রান্ত মাকে রাস্তায় ফেলে যেতে কোন কোন সন্তানের হৃদয় পর্যন্ত কাঁপেনি। আবার একজন ভাইরাস সংক্রমিত মাকে দৃষ্টির আড়াল করতে পারেনি তার সন্তান। এ রকম একটি মাতৃভক্তির ঘটনা সারা বিশ্বের নজর কেড়েছেন।

এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ফিলিস্তিনের। আইসিইউ-তে করোনা আক্রান্ত মা যতক্ষণ বাঁচলেন, ততক্ষণ হাসপাতালের জানালার পাশে বসেছিল ছেলে। মায়ের সঙ্গে দেখা করার কোনো উপায় ছিল না। তাই দূর থেকেই মাকে দৃষ্টিতে রাখছিলেন ছেলে।

সম্প্রতি এরকম একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের কয়েকতলা ওপরে কাঁচের দেওয়ালের পাশে ভেতরের দিকে তাকিয়ে বসে আছেন এক ব্যক্তি। বয়সও বেশি নয়, ৩০ বছরের যুবক। তিনি ঝুঁকি নিয়ে কেন হাসপাতালের জানালার পাশে বসে আছেন?‌ সেই বিষয়ের সন্ধান করতেই বেরিয়ে আসে অবাক করা তথ্য।

জানা গেছে, ওই যুবকের নাম জিহাদ আল সুয়াইতি। তার মা করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন। সরকারি হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি মাকে দেখতে যাওয়ার অনুমতি পায়নি ছেলে। তাই জানালার পাশে বসে মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি।

মায়ের অন্তিম মুহূর্তে তার কাছ থেকে সরে যেতে চায়নি এই যুবক। তাই জানালায় বসে মাকে দেখছিলেন জিহাদ। নিজের চোখে পরমপ্রিয় মায়ের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া দেখেছে সে। যতদিন মা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, ততদিন রাতে ওই জানালার ধারে বসে থাকতেন এই যুবক।

মহম্মদ সাফা নামের একজন ছবিটি শেয়ার করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর জিহাদ আল সুয়াইতির মাতৃভক্তির ঘটনাটি তুলে ধরেন তিনি।

করোনা আক্রান্ত মায়ের আগে থেকেই ছিল লিউকোমিয়া। পাঁচদিন তাঁকে ভর্তি থাকতে হয়েছিল হাসপাতালে। সেই তরুণ সন্তান বলেন, আমার অসহায় লাগতো। তাই হাসপাতালের জানলার ধারে বসে থাকতাম। মাকে দেখতে।

আগে থেকেই লিউকোমিয়ার রোগী ছিলেন মা, পরে তার শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারপর থেকে পাঁচদিন ভর্তি থাকতে হয়েছিল হাসপাতালে।

ওই যুবক জানান, ‘মাকে ছাড়া আমার অসহায় লাগতো। তাই হাসপাতালের জানালার পাশে বসে থাকতাম এবং মাকে দেখতাম।’
সূত্র : নিউজ ১৮

এই বিভাগের আরো খবর