শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের ফজিলত

ডেস্ক নিউজ : আল্লাহ তাআলা মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। বান্দা আল্লাহর কাছে আবেদন ছাড়াই মহামূল্যবান জীবন, প্রখর মেধা ও তীক্ষ্ণ জ্ঞান-বুদ্ধি, নাক, কান, চোখ, মুখ, জিহ্বা, হাত-পাসহ অসংখ্য নিয়ামাত লাভ করেছে।

এ সুন্দর পৃথিবীতে বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ, আলো, বাতাস, পানি ও প্রয়োজনীয় অসংখ্য নিয়ামাত লাভ করেছে। যার জন্য আল্লাহ তাআলা মানুষের কাছে কোনো কিছুই চায় না। শুধুমাত্র তাঁর শুকরিয়া আদায় ছাড়া। সুতরাং আল্লাহর এ অগণিত অসংখ্য নিয়ামাতের সুবিধা ভোগের বিপরীতে শুধুমাত্র তার শুকরিয়া আদায় বা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনই যথেষ্ট। আল্লাহ তাআলা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনে সবচেয়ে বেশি সন্তুষ্ট হন।

২২-২৩. মহাকাশে রয়েছে তোমাদের জীবনোপকরণ এবং প্রতিশ্রুত সবকিছু। মহাকাশ ও (ভাসমান) পৃথিবীর প্রতিপালকের শপথ! (মৃত্যুর পর উত্থান ও মহাবিচার) এ এক বাস্তব সত্য, যেমন বাস্তবতা হচ্ছে তোমাদের পরস্পরের কথাবার্তা। [সূরা জারিয়াত]

৪৯-৫০. মহাকাশ ও (ভাসমান) পৃথিবীর একচ্ছত্র আধিপত্য আল্লাহর। তিনি যা ইচ্ছা করেন, তা-ই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন, যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন। যাকে ইচ্ছা পুত্র ও কন্যা উভয়ই দান করেন। যাকে ইচ্ছা তাকে সন্তানহীন করে রাখেন। তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। [সূরা শুরা]

৫-৬. নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে মহাকাশ ও (ভাসমান) পৃথিবীর কোনোকিছুই গোপন নেই। তিনি মাতৃগর্ভে যেভাবে ইচ্ছা তোমাদের আকৃতি গঠন করেন। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি সর্বশক্তিমান, প্রজ্ঞাময়। [সূরা আলে ইমরান]

১১. তিনি মহাকাশ ও (ভাসমান) পৃথিবীর স্রষ্টা। তিনি স্বজাতীয়দের মধ্য থেকেই তোমাদেরকে সাথি দিয়েছেন, একইভাবে সাথি দিয়েছেন গৃহপালিত প্রাণীদের। আর এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তিনি তোমাদের বংশবিস্তার করেন। কিন্তু কোনোকিছুই তাঁর মতো নয়। তিনি সব শোনেন, সব দেখেন। ১২. মহাকাশ ও (ভাসমান) পৃথিবীর সবকিছু নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি তাঁরই কাছে। তিনি যার জন্যে ইচ্ছা রিজিক বৃদ্ধি করেন, যার জন্যে ইচ্ছা রিজিক সীমিত করেন। তিনি সব বিষয়ে সবকিছু জানেন। [সূরা শুরা]

২৩. হে নবী! ওদের বলো, আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। তিনি তোমাদের শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি দান করেছেন, সেইসাথে দিয়েছেন বিচারবুদ্ধি, অন্তঃকরণ। অথচ তোমাদের শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতার প্রকাশ খুবই কম। [সূরা মূলক]

৬৮. তোমরা যে পানি পান করো, সে-সম্পর্কে কি তোমরা কখনো চিন্তা করেছ? ৬৯. তোমরা কি মেঘমালা থেকে পানি নামিয়ে আনো, না আমি পানিবর্ষণ করি? ৭০. আমি তো ইচ্ছা করলে নোনা বা তেতো পানিবর্ষণ করতে পারি। তাহলে কেন তোমরা শুকরিয়া আদায় করবে না? [সূরা ওয়াকিয়া]

৭৮. (হে মানুষ! আল্লাহর কথা শোনো! কারণ) তিনি তোমাদেরকে দেখা ও শোনার শক্তি দিয়েছেন, বিচার-বিবেচনা করার জন্যে দিয়েছেন মন (চিন্তা করার শক্তি)। তারপরও তোমরা কত কম শুকরিয়া আদায় করো! ৭৯. তিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে আধিপত্য দিয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত তোমরা তাঁর কাছেই সমবেত হবে। ৮০. তিনিই জীবন দান করেন, তিনিই মৃত্যু ঘটান। রাত ও দিনের আবর্তন তাঁরই নিয়ন্ত্রণে। এরপরও কি তোমরা তোমাদের সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করবে না? [সূরা মুমিনুন]

২৭৪. নিশ্চয়ই যারা তাদের উপার্জন থেকে রাতে বা দিনে, প্রকাশ্যে বা গোপনে, সচ্ছল বা অসচ্ছল অবস্থায় দান করে, তাদের জন্যে তাদের প্রতিপালকের কাছে পুরস্কার রয়েছে। তাদের কোনো ভয় বা পেরেশানি থাকবে না। [সূরা বাকারা]

২৬১. যারা নিজেদের ধনসম্পত্তি আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের এই সৎদান এমন একটি শস্যবীজ, যাতে উৎপন্ন হয় সাতটি শিষ আর প্রতিটি শিষে থাকে শত শস্যদানা। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বহুগুণ প্রবৃদ্ধি দান করেন। আল্লাহ অনন্ত প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। [সূরা বাকারা]

আলিফ-লাম-মীম। ২. এ সেই কিতাব, যাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই কিতাব আল্লাহ-সচেতনদের পথপ্রদর্শক। ৩. আল্লাহ-সচেতনরা গায়েবে (মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞানে বোধগম্য না হওয়া সত্ত্বেও অদৃশ্য বাস্তবতায়) বিশ্বাস করে, নামাজ কায়েম করে, প্রাপ্ত রিজিক থেকে অন্যের জন্যে ব্যয় করে (অর্থাৎ নিয়মিত দান করে)। ৪-৫. আর (হে নবী!) তোমার ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি যা নাজিল হয়েছে তা তারা বিশ্বাস করে। সেইসাথে বিশ্বাস করে আখেরাতে (প্রতিটি কাজের জবাবদিহিতায়)। তারাই তাদের প্রতিপালকের নির্দেশিত সঠিক পথের অনুসারী এবং তারাই সফলকাম। [সূরা বাকারা]

৬৬. (বুঝতেই পারছ) আল্লাহই তোমাদের জীবন দান করেছেন। তিনিই তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন। আবার তিনিই তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন। তারপরও মানুষ অতি-অকৃতজ্ঞ! [সূরা হজ]

৫৫-৫৬. ওরা কি মনে করে যে, ওদের যে (যোগ্যতা, মেধা, কর্মক্ষমতা) সম্পদ ও সন্তানসন্ততি দান করেছি, তা শুধু বৈষয়িক সাফল্য লাভে প্রতিযোগিতা করার জন্যে? এটাই সৎকর্ম? না, তা নয়! ওরা আসলে বুঝতে পারছে না (এটাই ওদের একটা পরীক্ষা)! [সূরা মুমিনুন]

সুতরাং এ কথা স্মরণযোগ্য যে, বান্দা যদি আল্লাহর নিয়ামাতের শুকরিয়া আদায় করে এবং তাঁর অবাধ্য কাজ থেকে বিরত থাকে তবে আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি নিয়ামাত আরো বাড়িয়ে দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছোট্ট একটি হাদিস উল্লেখ করা যায়, ‘যে ব্যক্তি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের তাওফিক প্রাপ্ত হয়, সে ব্যক্তি আল্লাহর নিয়ামাত ও বরকত বৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত হয় না।

এই বিভাগের আরো খবর