মঙ্গলবার, ৩০শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আশূরার রোযা

ডেস্ক নিউজ :  ইসলামের প্রাথমিক যুগে আশুরার রোজা ফরজ ছিলো। দ্বিতীয় হিজরি সনে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হলে আশুরার রোজা ঐচ্ছিক হিসেবে বিবেচিত হয়। আশুরা দিবসে রোজা পালনের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের পর সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা।’ (মুসলিম: ১/৩৫৮)

আশুরার রোজা সব নবীর আমলেই ছিল। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় থাকতেও আশুরার রোজা পালন করতেন। হিজরতের পর মদিনায় এসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখতে পেলেন, ইহুদিরাও এই দিনে রোজা রাখছে। আমাদের প্রিয় নবী রাসুল ই পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এই দিনে রোজা রাখার কারণ জানতে পারলেন—এদিনে মুসা (আঃ) সিনাই পাহাড়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত কিতাব লাভ করেন। এই দিনেই তিনি বনি ইসরাইলদের ফেরাউনের জেলখানা থেকে উদ্ধার করেন এবং তাদের নিয়ে লোহিত সাগর অতিক্রম করেন। আর ফেরাউন সেই সাগরে ডুবে মারা যান। তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ইহুদিরা এই দিন রোজা রাখে।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মুসা (আঃ)-এর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তাদের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ ও অগ্রগণ্য। এরপর তিনি ১০ই মহররমের সঙ্গে ৯ই মহররম অথবা ১১ই মহররম মিলিয়ে ২টি রোজা রাখতে বললেন। কারণ, ইহুদিদের সঙ্গে মুসলমানদের যেন সাদৃশ্য না হয়। দ্বিতীয় হিজরিতে রমজান মাসের রোজা ফরজ করা হলে আশুরার রোজা নফল হয়ে যায়। তবে রমজানের রোজা রাখার পর আশুরার রোজা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ। এ মাসের নফল রোজা ও অন্যান্য ইবাদত রমজান মাস ব্যতীত অন্য যেকোনো মাস অপেক্ষা অধিক উত্তম। (মুসলিম ও আবু দাউদ)।

১০ই মহররম আশুরার রোজা রাখা সুন্নত। আশুরার দিনে ও রাতে নফল নামাজ পড়া। মহররম মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বিদের সুন্নত রোজা; ২০, ২৯ ও ৩০ তারিখ নফল রোজা এবং প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার সুন্নত রোজা। এ মাসে প্রতি রাতে ১০০ বার দরুদ শরিফ ও ৭০ বার ইস্তিগফার পড়া অত্যন্ত ফজিলতের আমল। [তরিকত শিক্ষা, খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লাহ (রহ.) পৃষ্ঠা: ৩০ ও ৯৬; রাহাতুল কুলুব, ইমাম রাজিন (রহ.)]।

আশুরার রোজা রাখার চারটি নিয়ম রয়েছেঃ যথা—১ হতে ১০ তারিখ পর্যন্ত মোট ১০টি রোজা রাখা। তা সম্ভবপর না হলে ৯, ১০ ও ১১ তারিখ মোট ৩টি রোজা রাখা। তাও সম্ভব না হলে ৯ ও ১০ তারিখ অথবা ১০ ও ১১ তারিখ মিলিয়ে ২টি রোজা রাখা। এটাও সম্ভব না হলে শুধু ১০ তারিখে ১টি রোজাও রাখা যাবে। যদি কেউ শুধু ১০ তারিখে রোজা রাখেন এবং ৯ বা ১১ তারিখ রাখতে না পারেন; তবে এই ১টি রোজার জোড়া মেলানোর জন্য অন্য দিন রোজা রাখার প্রয়োজন হবে না।

হজরত কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী, আল্লাহ্ সুবাহনতালার অছিলায় অতীতের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ (তিরমিজি ও মুসনাদে আহমাদ)।

এই বিভাগের আরো খবর


Mersin rus escortMersin rus escort